ইংল্যান্ড সিরিজে কোন দুটি শব্দ সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়েছে বলুন তো? ‘নিরাপত্তা’ আর ‘১৫ মাস’। প্রথমটি বেশি আলোচিত হয়েছে ওয়ানডে সিরিজের আগে, দ্বিতীয়টি টেস্টের আগে। নিরাপত্তা-সংক্রান্ত আলোচনা মিইয়ে এসেছে আগেই। পরেরটিও অনেকটা থেমে গেছে চট্টগ্রাম টেস্টের পর।
প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট তুলে নেওয়া, ফলের জন্য শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা—ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স দেখে বোঝাই যায়নি তারা ক্রিকেটের বড় পরিসরে খেলতে নেমেছে প্রায় ১৫ মাস পর। এই লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে ইংল্যান্ডের চোখে চোখ রেখে সামনেও লড়তে চান তামিম ইকবাল, ‘খুব ভালো খেলেছি দেখে বলাটা খুব সহজ হয়ে যাচ্ছে। ১৫ মাস পর হঠাৎ একটা টেস্ট খেলা মোটেও সহজ নয়। খেলোয়াড়েরা বিশেষ করে ব্যাটসম্যানরা
টি-টোয়েন্টি-ওয়ানডে খেলার পর টেস্টে দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছে! দল হিসেবে আমরা খুবই ভালো করেছি। আগামী ছয় মাসে আমাদের বেশ কয়েকটি টেস্ট আছে। চট্টগ্রাম টেস্ট থেকে যে ছন্দ পেয়েছি, আশা করি সামনেও এটা ধরে রাখব।’
দূরে দৃষ্টি তো থাকবেই। কিন্তু তামিমদের নিশ্বাস-দূরত্বে অপেক্ষা করছে ঢাকা টেস্ট। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে থাকতে এই টেস্টে জয়ের বিকল্প নেই। এ পর্যন্ত দুদলের ৯ বারের সাক্ষাতের প্রতিটিতে হারের পরও ইংলিশদের সঙ্গে জয়ের স্বপ্ন! হ্যাঁ, চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স এতটাই উজ্জ্বল যে তামিমদের জয়ের আকাঙ্ক্ষা ভেতরে ভেতরে তৈরি হতেই পারে। কাল মিরপুরে অনুশীলন শেষে সেই ইঙ্গিতই দিলেন বাংলাদেশের বাঁহাতি ওপেনার, ‘চট্টগ্রাম টেস্টে ইতিবাচক কিছু বিষয় ছিল। আমরা পাঁচ দিনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। যদি জিততে পারতাম অন্য রকম অনুভূতি হতো। সামনে আমাদের চেষ্টা থাকবে ম্যাচ জেতার। মাঠে যে ১১ জন নামে, সবাই জেতার জন্য নামে। পারি না-পারি এটা অন্য বিষয়। পরের টেস্টেও আমাদের একই পরিকল্পনা থাকবে। প্রথম বল থেকে শেষ বল পর্যন্ত নিজেদের কাজটুকু ভালোভাবে করার চেষ্টা করব। যদি জয় সম্ভব না হয় তখন অন্য পদক্ষেপ বা ড্রয়ের চিন্তা আসবে।’
চট্টগ্রাম টেস্টটা ভালো গেলেও চলছে নিজেদের ভুলের ময়নাতদন্ত। বিশেষ করে ব্যাটসম্যানদের থিতু হয়ে আউট হয়ে যাওয়াটা। যদিও তামিম আগেই বলেছেন চট্টগ্রামের উইকেটটা এমনই ছিল যেকোনো ব্যাটসম্যানই থিতু বলে দাবি করতে পারেননি। ঢাকার উইকেটও যদি একই ধরনের হয়, তিনি চাইবেন ইনিংসটা লম্বা করতে, ‘ওখানে ব্যাটিং করা অবশ্যই কঠিন ছিল। ৩০ রানের ইনিংসও ৬০-৭০ রানের সমান। তবে ৩০-৪০ থেকে আমরা যদি আরও ২০-৩০ রান বেশি করতাম তাহলে আমাদের জন্য টেস্টটা আরও সহজ হয়ে যেত। এখানেও যদি কন্ডিশনটা এমন হয়, তাহলে আমাদের সবার চেষ্টা করা উচিত মিলিতভাবে। আর যদি কন্ডিশন ব্যাটিং-সহায়ক হয় যত সম্ভব লম্বা ইনিংস খেলার চেষ্টা করব।’
চট্টগ্রাম টেস্টে ২৬ বার ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমের (ডিআরএস) দ্বারস্থ হয়েছে দুই দল, যেটি এক টেস্টে সর্বোচ্চ। বারবার আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্ত তো আছেই, প্রশ্ন উঠেছে ডিআরএসের নির্ভুলতা নিয়েও। যদিও মুশফিকুর রহিমের মতো তামিমও আস্থা রাখছেন ডিআরএসেই, ‘এটা এক আজব জিনিস, আমি খুব ভালো বুঝি না! এটা আসলে কখনো আমাদের পক্ষে যাবে। কখনো ওদের। এসব নিয়ে আমরা খুব একটা চিন্তিত নই। সবকিছুর আগে আমাদের ভালো খেলতে হবে।’
তথাস্তু তামিম! ভালো খেললে ডিআরএস-উইকেট—এসব আলোচনা এমনিই চলে যাবে পেছনের পাতায়।
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷