কার্বনের নতুন রূপ: পাথরের মত শক্ত, রাবারের মত প্রসারণশীল
কার্বনকে ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণগণে তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করে বিজ্ঞানীরা এর নতুন একটি রূপ আবিষ্কার করেছেন যা অতিশক্তিশালী, অতিহালকা কিন্তু একই সাথে রাবারের মতো স্থিতিস্থাপক এবং বিদ্যুৎ পরিবাহী।
নতুন এই কার্বনের রূপটি শুধু একগুচ্ছ অনণ্যসাধারণ বৈশিষ্ট্যও দেয় না বরং যে পদ্ধতিতে এই বস্তুটি আবিষ্কৃত হয়েছে তাতে নতুন এক শ্রেনীর বস্তু আবিষ্কারের পথ খুলে গেছে যেমনটি আমরা ইতিপূর্বে কখনো দেখিনি।
মহাবিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ প্রাচুর্যের মৌল কার্বন শুধুমাত্র পৃথিবীতে প্রাণ ধারণের মূল উপাদানই নয় বরং ভৌত ধর্মের দিক থেকে খুব কম মৌলই রয়েছে যা কার্বনের মতো বৈচিত্র্যময়।
সুনির্দিষ্ট পারমানবিক বিন্যাসে গ্রাফাইটের মতো নরম পিচ্ছিল রূপ তৈরি হয়, আবার অন্যভাবে সাজালে আপনি পাবেন হীরা, যা পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন বস্তু। এর পরে আরো আছে গ্রাফিন, যা বিজ্ঞানের পরিচিত সবচেয়ে শক্তিশালী বস্তু।
এখন আবার গবেষকগণ বের করলেন, যদি আপনি এই মৌলটিকে ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উত্তপ্ত করেন আর বায়ুমন্ডলের প্রযুক্ত চাপের ২৫০,০০০ গুণ চাপ প্রয়োগ করেন তাহলে আপনি অতিশক্তিশালী অথচ অতিনমনীয় এমন একটি বস্তু পেয়ে যাবেন যার প্রয়োগ হতে পারে প্রতিবন্দী ব্যক্তির বাহ্যিক কঙ্কাল হতে শুরু করে মহাশূন্যযান পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে।
গবেষক দলের একজন, চীনের ইয়ানশান বিশ্ববিদ্যালয়ের
নিচের ছবিতে আপনারা এই বস্তুটির তিনটি আদল দেখতে পাবেন যেখানে লাল গোলক দ্বারা হীরার মতো সংযুক্তি এবং কালো গোলক দ্বারা গ্রাফিনের স্তর দেখানো হয়েছে। বস্তুর নাম দেওয়া হয়েছে Compressed glassy cabon বা সংকুচিত কাচীয় কার্বন।
ইতিপূর্বে বিজ্ঞানীরা এমন বস্তু তৈরি করেছেন কিন্তু যথাযথ তাপমাত্রা ও চাপের সমন্বয়ের অভাবে এধরনের বস্তু তৈরি হলেও তা আগের রূপে ফিরে যেত। ঝাও এবং তাঁর গবেষক দল অবশেষে সেই যথাযথ তাপমাত্রা ও চাপের সমন্বয় খুঁজে পেয়েছেন। ফলস্বরূপ পাওয়া গেছে একটি অভিনব কার্বন যাতে রয়েছে একই সাথে গ্রাফাইটের মতো এবং হীরার মতো বন্ধন, সেই সাথে এতে রয়েছে গ্রাফিনের স্তর যার মাধ্যমে একই সাথে পাওয়া যাবে নমনীয়তা এবং দৃঢ়তা। [Science Alert অবলম্বনে]
কোন মন্তব্য নেই
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷