নতুন আবিষ্কৃত ব্যাকটেরিয়া প্লাস্টিক খেতে সক্ষম




জাপানের একদল বিজ্ঞানী একপ্রকার ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেb যা প্রচলিত প্লাস্টিক পানির বোতল খেতে সক্ষম।

গত মার্চে সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দাবি করা হয় যে, এই পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতিবছর পৃথিবীব্যাপী উৎপাদিত প্রায় ৫ কোটি টন প্লাস্টিক বোতল নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

প্লাস্টিক পানির বোতলগুলো পলিথিলিন টেরিফথেলেট বা PET হিসেবে পরিচিত যা সাধারণত পলিয়েস্টার পোশাক, হিমায়িত খাবারের পাত্র এবং গুটী মোড়কে পাওয়া যায়। ম্যাসাচুসেটস এর উডস হোল ওশানোগ্রাফিক ইন্সটিটিউট থেকে ট্রাসি মিনসার বলেন, “আপনি যদি ওয়াল-মার্টের করিডর দিয়ে হাঁটেন তবে সেখানে অসংখ্য PET দেখতে পারবেন।”

পিইটি এর একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা রং বিহীন হালকা ওজনের এবং অধিক শক্তিশালী। এছারাও এগুলোকে কোন জীবণু বিভক্ত করতে পারেনা। পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গিয়েছিলো অল্প কিছু প্রজাতির ছত্রাক পিইটির মধ্যে জন্মায় কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউই এই বস্তুকে খাওয়ার মতো কোন জীবাণু খুঁজে পায়নি। বিশেষজ্ঞরা এই প্রক্রিয়াটিকে “বায়োডিগ্রেডেশন” বলে থাকেন।

প্লাস্টিক খাওয়া জীবাণুদের খুঁজতে জাপানী বিজ্ঞানীদের দল প্লাস্টিক বোতল প্রক্রিয়াকরণ এলাকা থেকে ২৫০ টি পিইটি সম্বলিত নমুণা সংগ্রহ করেন যাতে মাটি, পলল এবং বর্জ্য মিশ্রিত ছিল। এরপর তারা দেখেন নমুণাগুলিতে বসবাসরত জীবাণু পিইটি খায় কিনা এবং তা খেয়ে জীবিত থাকতে পারে কিনা। অবশেষে তারা ব্যাকটেরিয়ার একটি প্রজাতি খুঁজে পান যা পিইটির অবস্থার পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। তারা এর নাম দেন আইডিয়েনেলা সাকেনেসিস।

গবেষণাগারের পরবর্তী পরীক্ষায় প্রকাশ পায় যে এটি পিইটি ভাঙ্গার জন্য দুটি এনজাইম ব্যাবহার করে। পিইটি পৃষ্ঠে অবস্থান করে মাধ্যমিক পর্যায়ের একটি রাসায়নিক উৎপাদন করার জন্য ব্যাকটেরিয়াটি একটি এনজাইম গোপন করে রাখে। পরবর্তীতে কোষের মাধ্যমে ঐ রাসায়নিক সংগ্রহ করে অন্য একটি এনজাইম দিয়ে ভেঙ্গে ফেলে এবং ব্যাকটেরিয়া এর থেকে কার্বন এবং শক্তি উৎপন্ন করে।

গবেষকগণ জানান আইডিয়েনেলা সাকেনেসিসের একটি সম্প্রদায় এই পদ্ধতিতে কাজ করেই ছয় সপ্তাহের মধ্যে ৮৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রায় পিইটির পাতলা স্তর ভেঙ্গে ফেলতে সক্ষম হয়।

মিনসার জানান, গবেষণাটির মাধ্যমে আমরা খুব ভালোভাবে দেখতে পেরেছি এই জিবাণুগুলো খুব ভালোভাবেই প্লাস্টিক খেতে পেরেছে। তবে সমুদ্রের প্লাস্টিক নির্মূল করতে এটা কতোটা উপযোগী হবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। কিন্তু এরকম গবেষণা অন্যান্য পিইটি ভাঙ্গা জীবাণু খুঁজে বের করার পথ সুগম করে দেবে।

কোন মন্তব্য নেই

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷

Blogger দ্বারা পরিচালিত.